নিউজ ডেস্ক, লখনউ: উত্তরপ্রদেশের কানপুরের (kanpur) এক বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সুশীল কুমার (shusil kumar)। করোনা আক্রান্তদের (corona infected) মৃত্যু দেখতে দেখতে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন এই প্রবীণ চিকিৎসক। মানসিক অবসাদের (mental depression ) কারণে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে নিজের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে খুন করলেন তিনি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যের মানুষ চমকে উঠেছেন।
জানা গিয়েছে, চিকিৎসক হিসেবে হাসপাতলে যুক্ত থাকার কারণে বিগত দেড় বছর ধরে একের পর এক করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু সামনে থেকে দেখেছেন তিনি। করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ কিভাবে মৃত্যু মিছিলের কারণ হয়ে উঠেছিল তা সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছিলেন সুশীল কুমার। সম্প্রতি করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই সুশীল তাঁর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। ওমিক্রনের হাত থেকে নিজের পরিবারকে রক্ষা করতে ওই চিকিৎসক নিজের হাতেই স্ত্রী চন্দ্রপ্রভা (৪৮) ও ছেলে শিখর (১৯) ও মেয়ে খুশিকে (১৬) হত্যা করেন। পুলিশ চিকিৎসকের স্ত্রী ও সন্তানদের দেহের কাছ থেকে একটি নোট উদ্ধার করেছে।
ওই নোটে সুশীল কুমার লিখেছেন, ‘আমি আর লাশ গুনতে চাই না’। স্ত্রী এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সুশীল কুমারের সংসার। তিনি কানপুরের ইন্দিরা নগরের বাসিন্দা। শুক্রবার সন্ধ্যায় হঠাৎই ওই চিকিৎসকের ভাইয়ের মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। সেখানে সুশীলকুমার লিখেছিলেন, মানসিক অবসাদের কারণে তিনি নিজের ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রীকে খুন করেছেন। এই মেসেজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সুশীলের ভাই বিষয়টি পুলিশকে জানান পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই চিকিৎসকের বাড়ি থেকে তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তানের নিথর দেহ উদ্ধার করে। মৃতদেহের পাশেই পড়েছিল একটি ভারী হাতুড়ি ও সুশীল কুমার এর লেখা ওই চিঠি।
চিঠিতে সুশীলকুমার লিখেছেন, তিনি নিজে এক দুরারোগ্য অসুখে ভুগছেন। তিনি তাঁর পরিবারকে কোনও রকম সমস্যায় ফেলতে চান না। ইতিমধ্যেই করোনায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নতুন প্রজাতি ওমিক্রনের কারণে আরও বহু মানুষ মারা যাবে। তাই নতুন করে তিনি আর মৃত্যু দেখতে পারছেন না। একই সঙ্গে ওই চিকিৎসক লিখেছেন, একটি ভুলের কারণে তিনি একই জায়গায় আটকে আছেন। সেখান থেকে বের হওয়া তাঁর পক্ষে দুঃসাধ্য। স্ত্রী, এক ছেলে ও মেয়েকে খুন করার পর অবশ্য সুশীল কুমার নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। এই মুহূর্তে তিনি কোথায় আছেন তা জানতে পুলিশ তল্লাশি করছে। তবে এখনও পর্যন্ত তাঁর হদিশ মেলেনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ভারি হাতুড়ি দিয়ে স্ত্রীকে খুন করেছেন সুশীল কুমার। ছেলে ও মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন। সম্ভবত শুক্রবার সকালের দিকেই এই খুনগুলি করেছেন তিনি।