News Desk: যত দোষ নন্দঘোষ! মানে সংবাদ মাধ্যমের। নিজের পক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে চাপের মুখে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর এবার দাবি, আমি কখনই বলিনি ফের কৃষি আইন লাগু হবে। সবই সংবাদমাধ্যমে বিকৃত করে প্রকাশিত হয়েছে।
২৪ ঘন্টাও কাটল না, তার আগেই ডিগবাজি খেলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। এবার স্পষ্টভাবেই জানালেন, নতুন করে কৃষি আইন কার্যকর করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কৃষি চালু করার কোনও কথাই নাকি তিনি বলেননি।
শুক্রবার মহারাষ্ট্রের এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী বলেছিলেন, আপাতত তাঁরা কৃষি আইন নিয়ে পিছিয়ে গিয়েছেন অর্থাৎ আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু আগামী দিনে ফের এই আইন সামনে আনা হতে পারে। তোমরের এই মন্তব্য নিয়ে যথারীতি গোটা দেশে তৈরি হয় তীব্র চাঞ্চল্য। অনেকেই বলতে থাকেন, মোদী সরকার সময় ও সুযোগ পেলে এই কৃষি আইন কার্যকর করবে। কৃষি মন্ত্রীর বক্তব্যেই সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
তোমরের ওই মন্তব্য নিয়ে আসরে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেরি করেনি কংগ্রেস। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, আগামী বছরের শুরুতে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন মিটে গেলেই সংশোধনী-সহ নতুন করে তিন কৃষি আইন কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে মোদী সরকারের।
কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবিরের রাজনৈতিক চাপ তো ছিলই পাশাপাশি বিভিন্ন কৃষক সংগঠনও নতুন করে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই খবর কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রীর কানে পৌঁছতেই ডিগবাজি খেলেন মন্ত্রী।
বক্তব্য থেকে সরে এসে মন্ত্রী বললেন, কৃষি আইন নিয়ে আমি এ ধরনের কোনও কথাই বলিনি। কৃষি আইন ফের সামনে আনা হবে, এটা তো একটা কল্পনা। আমি বলেছিলাম, সরকার স্বাধীনতার পর একটা বড়সড় পদক্ষেপ করেছিল। কৃষি ব্যবস্থায় একটা সংস্কার আনতে চেয়েছিল সরকার। কিন্তু ওই আইন যে যথেষ্ট ভাল ছিল সেটা আমরা সকলকে বোঝাতে পারিনি। বিশেষ করে যাদের কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য এই আইন তাদেরকেই আমরা বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি। ব্যর্থতার কারণেই আমরা ওই আইন ফিরিয়ে নিয়েছি। কিন্তু সংবাদমাধ্যম আমার এই মন্তব্যকে বিকৃত করেছে।
তোমরের কৃষি আইন ফের সামনে আনার মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বলেছিলেন, মোদি সরকার কৃষকদের অসম্মান করছে।
তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছিল কৃষক সংগঠনগুলি। আন্দোলনের চাপে পড়ে গুরু নানকের জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী এই তিন আইন বাতিল করার কথা ঘোষণা করেন। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল পাশ করে সাংবিধানিকভাবেই আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
আইন প্রত্যাহারের পরেও কৃষিমন্ত্রী তোমরের ওই মন্তব্য জল্পনা উস্কে দেয় যে, পাঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন মিটে গেলেই মোদী সরকার তিন কৃষি আইন সামনে আনতে পারে। ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত তোমর তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করলেন।