Omicron Updates: ওমিক্রন ভাইরাসে আক্রান্ত চতুর্থ ব্যক্তির খোঁজ মিলল ভারতে

নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: দেশে করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রন (Omicron) আক্রান্ত চতুর্থ এক ব্যক্তির খোঁজ মিলল মুম্বইয়ে। এর আগে শনিবারই ওমিক্রন আক্রান্ত তৃতীয় ব্যক্তির খোঁজ মিলে…

Omicron

নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: দেশে করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রন (Omicron) আক্রান্ত চতুর্থ এক ব্যক্তির খোঁজ মিলল মুম্বইয়ে। এর আগে শনিবারই ওমিক্রন আক্রান্ত তৃতীয় ব্যক্তির খোঁজ মিলে ছিল গুজরাতে। জানা গিয়েছে তৃতীয় ওই ব্যক্তি দু’দিন আগে জিম্বাবোয়ে থেকে গুজরাতের জামনগরে আসেন।

বিমানবন্দরে স্ক্রিনিংয়ের সময় তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সঙ্গে সঙ্গেই ওই ব্যক্তির জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য নমুনা পাঠানো হয় পুণের এক ল্যাবরেটরিতে। সেখান থেকেই জানা যায়, ওই ব্যক্তি ওমিক্রন ভাইরাস আক্রান্ত।অন্যদিকে করোনা আক্রান্ত চতুর্থজন মুম্বইয়ের কল্যাণ-ডোম্বিভালির বাসিন্দা। ৩৩ বছরের ওই ব্যক্তি সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুবাই হয়ে মুম্বইয়ে ফিরেছিলেন। ২৪ নভেম্বর তাঁর সামান্য জ্বর হয়েছিল। শরীরে অবশ্য অন্য কোনও উপসর্গ ছিল না। পরে ওই ব্যক্তির করোনা পরীক্ষা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপরই জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষায় দেখা যায় ওই ব্যক্তি ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন।

গুজরাতের স্বাস্থ্য সচিব জয়প্রকাশ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ৭২ বছর বয়সি এক বৃদ্ধর করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর জানা যায়। সম্প্রতি তিনি জিম্বাবোয়ে থেকে দেশে ফিরেছেন। সেই খবর জানার সঙ্গে সঙ্গেই ওই ব্যক্তির নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেই পরীক্ষাতেই জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি ওমিক্রন ভাইরাসে আক্রান্ত।

এরই মধ্যে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছিলেন ৩০০ জন ব্যক্তি। যাদের মধ্যে ১৩ জনের কোন খোঁজ মিলছে না। ওই ১৩ জন ভুয়ো ঠিকানা দিয়ে উত্তরপ্রদেশের মেরঠে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। যার মধ্যে সাতজন ফিরেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। এই খবর ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই উদ্বেগ আরও বেড়েছে। তবে শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, গত ১০ দিনে বিদেশ থেকে ফেরা ৩০ জনের কোনও খোঁজ মিলছে না অন্ধপ্রদেশে। শেষ ১০ দিনে অন্ধ্রপ্রদেশে বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরেছেন ৬০ জন। যার মধ্যে ৩০ জন বিশাখাপত্তনমে থাকলেও বাকি ৩০ জন কোথায় গিয়েছেন তার কোন খবর নেই। ওই ৩০ জনকে দ্রুত খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ইতিমধ্যেই বৃহনমুম্বাই পুরসভা জানিয়েছে, বিদেশ থেকে কেউ ফিরলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। বিদেশ ফেরত কোনও যাত্রী প্রশাসনের চোখকে যাতে ফাঁকি দিতে না পারে সেজন্য মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলি থেকে আসা যাত্রীদের তালিকা চেয়েছে বিএমসি। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় একবার করে ওই তালিকা পাঠানোর আর্জি জানানো হয়েছে। বিএমসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার করে তাদের বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।

অন্যদিকে তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে বাজার, শপিং মল, রেস্তোরাঁ, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দফতরে যেতে হলে অবশ্যই করোনার শংসাপত্র বাধ্যতামূলকভাবে সঙ্গে রাখতে হবে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাদুরাই ও সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের টিকার অন্তত একটি ডোজ নেওয়ার জন্য আরও এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। ওই সময়সীমার মধ্যে একটি ডোজ না নেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে প্রকাশ্য স্থানে ঘোরাফেরার অনুমতি দেওয়া হবে না।

ওমিক্রন ঠেকাতে তৎপর হয়ে উঠেছে বৃহনমুম্বাই কর্পোরেশন। বিএমসি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের কর্মীরাই কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের প্রতিটি গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করবেন। প্রতিদিন একজন চিকিৎসক তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন। এক সপ্তাহ পর ওই ব্যক্তিদের আরটি-পিসিআর টেস্ট করা হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ হলে তবেই তাঁরা বাইরে আসতে পারবেন। যদি রিপোর্ট পজিটিভ হয় তাহলে পরবর্তী ক্ষেত্রে তাঁদের জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা হবে। শহরের বিভিন্ন আবাসন কর্তৃপক্ষকেও বিএমসি জানিয়েছে, বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিরা যেন কঠোরভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নিয়ম মেনে চলেন।

উল্লেখ্য, গত কয়েকদিনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো থেকে ১৬ হাজার মানুষ ভারতে এসেছেন। যার মধ্যে ১৮ জন করোনা পজিটিভ। তাঁদের সকলেরই জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ওই ব্যক্তিদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে। ওমিক্রনের হাত থেকে রক্ষার পেতেই এই উদ্যোগ।