News Desk: গুজরাতের বিভিন্ন শহরে আমিষ খাবার (Non-Vegetarian Food) বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। শুধু নির্দেশ জারি করেই নিজেদের কর্তব্য শেষ করেনি পুরসভাগুলি (municipality)। রীতিমতো আমিষ খাবারের স্টলগুলির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করল গুজরাত হাইকোর্ট (gujrat highcourt)। আদালত এদিন স্পষ্ট জানিয়েছে, মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের সন্তুষ্টির জন্য কখনওই এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায় না।
এদিন হাইকোর্টে আমেদাবাদ (Ahmedabad ) পুরসভা পাল্টা জানায়, শুধুমাত্র যে সমস্ত খাবারের স্টল সরকারি জমি দখল করে ব্যবসা করছিল তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
যদিও আমেদাবাদ পুরসভাকে এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি বীরেন বৈষ্ণব কড়া ভর্ৎসনা করেন। পুরসভার আইনজীবীকে লক্ষ্য করে বিচারপতি বলেন, কেউ রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে আপনাকে বিষয়টি জানাল। আপনি তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিলেন রাস্তার ধারে কেউ কিছু বিক্রি করতে পারবে না। এটা কি ঠিক? কিছু মানুষকে খুশি করতে গিয়ে এভাবে কখনওই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। এতে অনেক বেশি মানুষের সমস্যা তৈরি হয়। এটা মানুষের জীবন ও জীবিকার প্রশ্ন, সেটা মাথায় রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, নভেম্বর মাসে আমেদাবাদ পুরসভা প্রকাশ্যে আমিষ খাবার বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তবে শুধু আমেদাবাদ পুরসভা নয়, রাজকোট, বরোদা-সহ আরও কয়েকটি শহরে এই একই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার পরেও বেশ কিছু হকার রাস্তার ধারে তাদের খাবারের স্টল চালু রাখেন। ফলে পুরসভা অভিযান চালিয়ে ওই স্টলগুলি বাজেয়াপ্ত করে। এরই প্রতিবাদে বেশকিছু হকার হাইকোর্টে আবেদন করেন। হকারদের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, তাঁরা যে শুধু আমিষ খাবার বিক্রি করতেন তা নয়। তাঁরা নানা নিরামিষ পদও বিক্রি করেন।
হকারদের ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি বলেন, ক্ষমতায় থাকা কোনও রাজনৈতিক দল বলল, এখানকার কোনও মানুষ আর ডিম খাবে না। সঙ্গে সঙ্গেই পুরসভার কর্তারা অমনি সেই কথাকে দৈববাণী বলে মনে করলেন। বেছে বেছে আমিষ খাবার বিক্রি করা স্টলগুলিকে তুলে ফেলে দিলেন, এটা কি চলতে পারে?
হাইকোর্টের ওই প্রশ্নের উত্তরে পুরসভার পক্ষ থেকে বলা হয়, যে সমস্ত স্টল রাস্তার ধারের জমি দখল করে ব্যবসা করছিল শুধুমাত্র সেগুলির বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পুরসভার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিচারপতি অবশ্য বলেন, যদি দখলদারদের বিরুদ্ধে পুরসভা পদক্ষেপ করে থাকে তাহলে সেটা ঠিক আছে। পুরসভা এটা করতেই পারে। কিন্তু কেউ বলল যে এখানকার মানুষ আর আমিষ খেতে চায় না, তার পরেই স্টলগুলি তুলে দেওয়া হল এটা তো মানা যায় না। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর হাইকোর্ট অবশ্য এই মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে।