Farm Laws: ৭০০ কৃষকের মৃত্যুর দায় কার, প্রশ্ন কৃষক নেতাদের

News Desk: কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সময় প্রায় ৬৭০ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। মৃতদের মধ্যে ৫০০ জনেরও বেশি পাঞ্জাবের বাসিন্দা।…

farmers

News Desk: কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সময় প্রায় ৬৭০ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। মৃতদের মধ্যে ৫০০ জনেরও বেশি পাঞ্জাবের বাসিন্দা। কৃষক আন্দোলনের অন্যতম নেতা রাকেশ টিকায়েত (Rakesh Tikayat) রবিবার প্রশ্ন তুলেছেন, শহিদ হওয়া কৃষক পরিবারগুলির দায়িত্ব কে নেবে?

দিল্লির তিন সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষকরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র (Narendra Modi) মোদির ঘোষণা অনুযায়ী তিন কৃষি আইন আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের বিক্ষোভ চলবে। একই সঙ্গে কৃষকরা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য আইন এবং গত এক বছরে কৃষকদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব পুলিশি মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছে। পাশাপাশি এদিন এটাও স্পষ্ট হয়েছে যে, আজ নয়, ২৭ নভেম্বরই কৃষক আন্দোলনের চূড়ান্ত ভাগ্য নির্ধারণ হবে।

lakhimpur violence farmers protest

১৯ নভেম্বর শুক্রবার গুরু নানকের জন্মজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিন কৃষি আইন (Farm Laws) প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর কৃষক আন্দোলন জারি রাখা হবে কিনা, তা নিয়ে রবিবারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল কৃষক সংগঠনগুলির। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হল। আপাতত যাবতীয় আন্দোলন কর্মসূচি জারি থাকবে বলেই জানিয়েছে সংযুক্ত কিসান মোর্চা ।

modi farm laws withdrawal announcement

মোদি (Narendra Modi) তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণার পর প্রশ্ন ওঠে যে, দিল্লি সীমান্তে প্রায় এক বছর ধরে যে আন্দোলন চালাচ্ছেন কৃষকরা তাকি চলবে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে শনিবারই বৈঠকে বসে সংযুক্ত কিষান মোর্চার অধীনে থাকা ৩২টি কৃষক সংগঠন। তবে শনিবার বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই রবিবার দিল্লির সিংঘু সীমান্তে সকাল ১১টায় দ্বিতীয় দফার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। এই বৈঠকেই আন্দোলনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কৃষক সংগঠনগুলির তরফে এই বৈঠক স্থগিত রাখা হয়। ২৭ নভেম্বর এই বৈঠক হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২৭ তারিখের বৈঠক না হওয়া অবধি কৃষক আন্দোলনের যাবতীয় কর্মসূচি বহাল থাকবে। সেই সূচি মেনে ২২ নভেম্বর লখনউয়ে যে মহাপঞ্চায়েতের আয়োজন করা হয়েছিল তাও নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ীই হবে।

কৃষক নেতা বলবীর সিং রাজেওয়াল বলেন, “সংযুক্ত কিসান মোর্চার তরফে যে সমস্ত কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল তা যথারীতি পালন করা হবে। সেই কর্মসূচি মেনেই ২২ নভেম্বর লখনউয়ে মহাপঞ্চায়েত, ২৬ নভেম্বর কৃষক আন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে সীমান্তে কৃষকদের বিশাল জমায়েত এবং ২৯ নভেম্বর থেকে সংসদ ভবন অবধি ট্রাক্টর মিছিলের যে পরিকল্পনা রয়েছে তা পালন করা হবে। ২৭ নভেম্বরের বৈঠকে ট্রাক্টর মিছিল নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

Rakesh Tikayet

রবিবার সকালে কৃষক আন্দোলনের সংগঠক সংযুক্ত কিষান মোর্চা সিংঘু সীমান্তে (singhu border)মোদির ঘোষণা এবং তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন। তবে এদিন বিস্তারিত কোনও আলোচনা হয়নি। এদিন নিজেদের মধ্যে কিছুক্ষণ কথা বলার পর কৃষক নেতা বলবীর সিং রাজেওয়াল (balbar sing) বলেছেন, “আমরা কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে আমরা শুধু মুখের কথায় বিশ্বাস করছি না। আমরা দেখছি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কবে এই আইন বাতিল করা হয়। পাশাপাশি আমাদের আরও কিছু দাবিদাওয়া রয়েছে। সেই দাবিগুলি আমরা খোলা চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানাবো। এছাড়াও আজ আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সংযুক্ত কিষান মোর্চার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিগুলি যেমন আছে তেমনই চলবে।”

শুক্রবার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছেন এবং ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) সহ অন্যান্য বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠনের আশ্বাস দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদির ঘোষণা সত্ত্বেও, কৃষক সংগঠনগুলি অবশ্য এখনই আন্দোলন প্রত্যাহার করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। মোদির ঘোষণার পর রাকেশ টিকায়েতকে প্রশ্ন করা হয়, টিকরি, সিংঘু ও গাজীপুর সীমান্ত থেকে আন্দোলনকারীরা এখনও সরে যায়নি কেন? জবাবে টিকায়েত বলেন, সীমান্ত খালি করার বিষয়ে কোনও কথা হয়নি। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওই তিন আইন বাতিলও হয়নি। আমরা শুধু মুখের ভরসা করতে পারছি না। এক বছর ধরে কৃষকরা এখানে আন্দোলন করছেন। শহিদ হয়েছেন প্রায় ৭০০ জন কৃষক। এর দায় কে নেবে? এ সময় এক সাংবাদিক টিকায়েতকে প্রশ্ন করেন, আগে আপনি বলতেন বিল প্রত্যাহার না হলে বাড়ি ফিরবেন না ।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তো গণমাধ্যমে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বিল ফেরত নেওয়ার কথা বলেছেন। এ বিষয়ে টিকায়েত বলেন, লক্ষাধিক কৃষক এখানে এক বছর ধরে ধর্নায় বসে থেকেছেন। কয়েক শো কৃষক শহিদ হয়েছেন। আন্দোলনে করার জন্য কৃষকদের ওপর আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। কৃষকদের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে একের পর এক মামলা। গত একবছরে কতকিছু ঘটেছে। সবকিছুর হিসাব বরাবর হলেই আমরা ফিরে যাবো। আমাদের আর কয়েকদিন দেরি হলে অসুবিধা কোথায়?