News Desk: কুলদীপ সিং তখন ২৪ বছরের এক তরুণ। ১৯৯২ সালে হঠাৎই ভুল করে তিনি সীমান্ত অতিক্রম করে ঢুকে পড়েছিলেন পাকিস্তান (Pakistan ) ভূখণ্ডে। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে পাকড়াও করে পাকিস্তানি সেনা। যথারীতি কুলদীপকে ভারতীয় গুপ্তচর (indian spy) বলে চিহ্নিত করা হয়। পাক আদালতের বিচারে ২৫ বছরের কারাদণ্ড হয় কুলদীপের (kuldeep sing)। সাজার মেয়াদ শেষ হতে শুক্রবার রাতে নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়ার (kathuya) বাসিন্দা কুলদীপ সিং।
ভারত-পাক সীমান্তবর্তী জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়ার বাসিন্দা কুলদীপ। প্রায় তিন দশক আগে কীভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে তিনি পাক ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিলেন সে কথা আজ ভালভাবে মনেও করতে পারেন না তিনি। কুলদীপ গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসতেই তাঁকে আতশবাজি পুড়িয়ে স্বাগত জানান গ্রামবাসীরা। পরিবারের আত্মীয়রাও কুলদীপকে নিয়ে খুশিতে মেতে ওঠেন।
কুলদীপ এদিন সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলির বাসিন্দাদের উদ্দেশ্য বলেছেন, দয়া করে কেউ ভুল করেও সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানে প্রবেশ করবেন না। কারণ পাকিস্তানে কোনও ভাবে কেউ ঢুকে পড়লে পাকসেনাদের একটাই কথা, তারা নাকি সকলেই ভারতীয় গুপ্তচর। চরবৃত্তির অভিযোগে ভারতীয়দের ওপর কী ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয় তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তাঁর নিজের উপরেও সাড়ে তিন বছর ধরে এ ধরনের নির্যাতন চলছে বলে কুলদীপ জানান।
৫৩ বছরের কুলদীপ বলেছেন, পাক সেনার হাতে ধরা পড়ার পর তাঁকেও ভারতীয় গুপ্তচর বলে চরম নির্যাতন শুরু হয়। এভাবেই তিনি টানা সাড়ে তিন বছর ধরে তদন্তকারী সংস্থার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শেষপর্যন্ত আদালত তাঁকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়। আদালতের নির্দেশে লাহোরের কোর্ট লাখপত জেলে বন্দি ছিলেন তিনি। জেল থেকেই তিনি পরিবারকে চিঠি লিখে পুরো বিষয়টি জানিয়েছিলেন। ওই চিঠি পাওয়ার পরই কুলদীপের পরিবার জানতে পেরেছিলেন যে তিনি পাকিস্তানে আছেন। আপাতত জীবিতও আছেন। তবে তিনি যে আর কোনওদিন বাড়ি ফিরতে পারবেন এতটা তাঁর পরিবার আশা করেনি। জীবনের মূল অধ্যায়টা কেটে গিয়েছে পাকিস্তানের জেলে।
তবে কুলদীপ এদিন জোরের সঙ্গে বলেছেন, দেশের জন্য কখনোই কোনও ত্যাগ স্বীকার করতে তিনি পিছপা হবেন না। পাকসেনারা কোনওভাবেই ভারতীয়দের সহ্য করতে পারে না। ভারতীয়দের উন্নয়ন-অগ্রগতিকে তারা রীতিমতো হিংসা করে। সেই হিংসা থেকেই তারা ভারতীয়দের উপর নির্যাতন চালায়।