নিউজ ডেস্ক, ভোপাল: মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) ভাতাউলি (Bhatauli gram panchayat) গ্রাম। গ্রামের মাঝখানে একটি মন্দিরের সামনে বেশ কিছু মানুষের ভিড়। কয়েকজন বসে আছেন, কেউবা দাঁড়িয়ে। হঠাৎই ওই ভিড়ের মধ্য থেকে শুরু হল দর হাঁকা।
কেউ বলছেন ২০ লাখ, তো অন্যজন বলছেন ২২ লাখ, কেউবা ২৫ লাখ। শেষ পর্যন্ত এভাবেই দর উঠল ৪৪ লাখ টাকা। কোনও মূল্যবান প্রাচীন সম্পদ নয়, কোনও মহান ব্যক্তির ব্যক্তিগত সংগ্রহের জিনিস নয়। মধ্যপ্রদেশের ভাতাউলি গ্রামে এভাবেই নিলাম হল ভাতাউলি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের পদ।
গ্রামের পঞ্চায়েত (panchyat pradhan) প্রধান কে হবেন তা নিয়ে শুরু হয়েছিল তীব্র বিতর্ক। তখনই গ্রামবাসীরা (villagers) ঠিক করেন, যিনি বেশি টাকা দেবেন তিনি হবেন পঞ্চায়েত প্রধান। এরপরই শুরু হয় নিলাম প্রক্রিয়া। নিলামে ৪৪ লাখ টাকা দর হেঁকে কার্যত পঞ্চায়েত প্রধান পদটি কিনে নিয়েছেন সৌভাগ সিং যাদব নামে এক ব্যক্তি।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই অবশ্য বেকায়দায় পড়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এভাবে নিলাম ডেকে পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচনের ঘটনার কথা উড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনের পাল্টা দাবি, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি এবং প্রশাসনিক পদ্ধতি মেনেই গ্রামের নতুন পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচন করা হবে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের এই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।
তাঁরা বলেছেন, পঞ্চায়েত প্রধান পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। ওই চারজনই প্রধান হতে চাই ছিলেন। সে কারণেই তাঁরা এই নিলাম ডাকার ব্যবস্থা করেন। নিলাম শুরু হয়েছিল ২১ লাখ টাকা থেকে। এক সময় দর ওঠে ৪৩ লাখ টাকা। এত টাকা দর ওঠায় অনেকেই চমকে ওঠেন। তবে চমকের আরও বাকি ছিল। শেষ পর্যন্ত নিলামে ৪৪ লাখ টাকা দর দিয়ে সৌভাগ সিং যাদব পঞ্চায়েত প্রধান পদে নির্বাচিত হন। সৌভাগ্য পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হতে এই গ্রামবাসীরা তাঁকে মালা পরিয়ে বরণ করে নেন।
একইসঙ্গে গ্রাম কমিটি থেকে জানানো হয়, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে সৌভাগের বিরুদ্ধে কেউ মনোনয়ন দাখিল করতে পারবেন না। পাশাপাশি কমিটি আরও জানিয়েছে, সৌভাগ যদি এক সপ্তাহের মধ্যে ৪৪ লাখ টাকা দিতে ব্যর্থ হন তাহলে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে প্রধান হিসেবে মেনে নেওয়া হবে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি ৪৩ লাখ টাকা দর দিয়েছেন তিনি পঞ্চায়েত প্রধান হবেন।
কেন এভাবে কেন পঞ্চায়েত প্রধান বেছে নেওয়া হল? এই প্রশ্নের উত্তরে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, প্রার্থীরা যাতে ভোটে জেতার জন্য গ্রামবাসীদের মধ্যে টাকা ও মদ বিলি করতে না পারেন সে কারণেই এভাবে প্রধান নির্বাচন করা হল। যদিও জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গ্রামবাসীদের এই নির্বাচন পদ্ধতিকে তারা কোনওভাবেই স্বীকৃতি দেবে না। প্রধান পদে যারা নির্বাচনে লড়বেন তাঁদের রীতিমতো আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।