News Desk, Mumbai: মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারের ১৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল আয়কর দফতর। জানা গিয়েছে, বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তির মধ্যে আছে দক্ষিণ দিল্লির একটি ফ্ল্যাট, জরানদেশ্বরে একটি চিনির কারখানা, গোয়ায় একটি রিসর্ট এবং নির্মলা হাউসে একটি বড়সড় অফিস।
কিছুদিন আগেই আয়কর দফতর মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশকিছু বেনামি জমি উদ্ধার করেছিল। যার আনুমানিক মূল্য ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। বেনামি ওই সম্পত্তির মালিকও অজিত পাওয়ার বলেই খবর। বাজেয়াপ্ত হওয়া এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক তিনি নন, এটা প্রমাণ করার জন্য ৯০ দিন সময় পাচ্ছেন উপমুখ্যমন্ত্রী পাওয়ার।
আয়কর দফতরের পক্ষ থেকেই উপ-মুখ্যমন্ত্রী পাওয়ারের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার এই খবর জানানো হয়েছে। এই কেন্দ্রীয় সংস্থা উপ-মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছে, এই সম্পত্তি যে তাঁর নয় সেটা তাঁকে প্রমাণ করতে হবে। উপ-মুখ্যমন্ত্রীর এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার খবরে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পাশাপাশি শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।
ইতিমধ্যেই শিবসেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। মহারাষ্ট্রে নির্বাচনে জিতে ক্ষমতা দখল করতে না পেরে ঘুর পথে তারা এ রাজ্যের ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। সে কারণেই শাসক দলের নেতা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করছে তারা। যার বেশিরভাগই ভিত্তিহীন। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাকেও নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কাজে লাগাচ্ছে নরেন্দ্র মোদি সরকার।
তবে উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পাওয়ারের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা নিয়ে কংগ্রেস এবং এনসিপি কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বিজেপির তরফেও মেলেনি কোনও প্রতিক্রিয়া।
এর আগে শনিবার রাতেই রাজ্যের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখকে গ্রেফতার করেছে ইডি। অনিলের বিরুদ্ধেও আর্থিক তছরুপ-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। মহারাষ্ট্রে যেভাবে শাসক জোটের একের পর এক নেতা ও মন্ত্রী দুর্নীতির ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছেন রাজ্য রাজনীতিতে তা যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে এই রাজ্যে কংগ্রেস, এনসিপি ও শিবসেনার জোট সরকার চলছে। কিন্তু যেভাবে একের পর এক এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে তাতে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বিব্রত বোধ করছেন।
রাজ্যের বিভিন্ন নেতা ও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বিজেপির চক্রান্ত বলে চালানোর চেষ্টা করলেও সেটা যে সব সময় মানুষ মেনে নেবে তা নয়। বিষয়টি বুঝতে পারছেন মুখ্যমন্ত্রীও। কিন্তু জোট সরকার টিকিয়ে রাখার কারণে মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা প্রধান শরিক দুই দলকে জোর গলায় কিছু বলতেও পারছেন না। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে উভয় সঙ্কটে পড়েছেন। একদিকে তাঁকে রাজ্যে সরকার টিকিয়ে রাখার কথা মাথায় রাখতে হচ্ছে, অন্যদিকে কিভাবে এই দুর্নীতির মোকাবিলা করা যায় তাও ভাবতে হচ্ছে।