নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা (Uttar Pradesh) নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে লখিমপুর খেরি কাণ্ডে (Lakhimpur Kheri) বিজেপির অস্বস্তি ততই বেড়ে চলেছে। মঙ্গলবার লখিমপুর কাণ্ডে সিটের তদন্ত রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। কৃষকদের খুন করতে রীতিমতো চক্রান্ত করা হয়েছিল।
ঘটনার জেরে সিট আদালতের কাছে লখিমপুর কাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার ধারা যুক্ত করার আবেদন জানায়। সেই আবেদনে সাড়া দিল আদালত। বুধবার আদালত অভিযুক্ত ১৩ জনের বিরুদ্ধেই খুনের চেষ্টার ধারা যুক্ত করার অনুমতি দিয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিস মিশ্রও (Ashish Mishra)। আদালতের এই নির্দেশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে গেরুয়া শিবির নিশ্চিতভাবেই চাপে পড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
লখিমপুরের ঘটনায় বিরোধীরা প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছে, বিজেপি নেতা ও মন্ত্রীর ছেলে এই ঘটনায় সরাসরি যুক্ত। তারা পরিকল্পনা করেই এই কাজ করেছে। বিরোধীদের সেই অভিযোগকে মান্যতা দিয়েছে সিটের রিপোর্ট।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় ধৃতদের বিরুদ্ধে আইপিসির ২৭৯, ৩৩৮ এবং ৩০৪এ (অবহেলায় মৃত্যু ঘটা) ধারা ছিল। কিন্তু সিটের রিপোর্টে ঘটনাটি সুপরিকল্পিত, ইচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা বলে উল্লেখ করা হয়। সিট তার রিপোর্টে স্পষ্ট জানায়, এটি কোনও দুর্ঘটনা বা অসতর্কতামূলক ঘটনা বলে মনে করার কোনও কারণ নেই। সাক্ষ্য প্রমাণ ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিচার করে বলা যায় রীতিমতো পরিকল্পনা করেই কৃষকদের পিষে মারা হয়েছিল। তাই অভিযুক্তদের প্রতি কোনওভাবেই নরম মনোভাব দেখান উচিত নয়। এর পরই সিটের তদন্তকারীরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭৯-ধারার পরিবর্তে ৩০৭ (খুনের চেষ্টা), ৩২৬ (স্বেচ্ছায় বিপজ্জনক অস্ত্রের দ্বারা গুরুতর আঘাত করা) ধারার মত বিভিন্ন ধারা যুক্ত করার জন্য আদালতের কাছে আর্জি জানান। পাশাপাশি এই ঘটনায় ৩০৪-এ ধারা বাতিল করার কথা জানায় সিট। ৩০৪ ধারার পরিবর্তে ৩০৭ ধারা-সহ বাকি ধারা যোগ করার অনুমতি চায় সিট। সিটের এই আবেদনে ইতিবাচক সাড়া দেয় আদালত। এদিন আদালত নির্দেশ দেয়, লখিমপুর কাণ্ডে ধৃতদের বিরুদ্ধে অবহেলার কারণে মৃত্যু’র পরিবর্তে ৩০৭ ধারা তথা ‘খুনের চেষ্টা’র ধারা যোগ করার।
<
p style=”text-align: justify;”>উল্লেখ্য, ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে মন্ত্রী-পুত্র আশিসের গাড়ি পিষে দেয় বিক্ষোভরত চার কৃষকে। আহত হন অনেকে। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয়ের দাবি, ঘটনার সময় তাঁর ছেলে আশিস গাড়িতে ছিলেন না। ঘটনার সময় তাঁর ছেলে অন্য একটি অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন। তবে মন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে শুধু পিষে খুন করার অভিযোগই নয়, গুলি চালানোরও অভিযোগও উঠেছে। ৯ অক্টোবর আশিসকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। উদ্ধার হয় তাঁর বন্দুক। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ধৃতদের সকলের বিরুদ্ধেই খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনতে চলেছে সিট।