নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশবাসীকে ‘আচ্ছে দিনের’ স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আচ্ছে দিন তো দূর অস্ত, বরং ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের (world inequality lab) সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে ভারত এক দরিদ্র এবং চরম অসাম্যের (inequality) দেশ। এই দেশের অধিকাংশ সম্পদ রয়েছে মাত্র ১ শতাংশ ধনী মানুষের (rich people) হাতে।
ফ্রান্সের প্যারিস স্কুল অব ইকোনমিক্সের (Paris school of economics) অন্তর্গত ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাব সম্প্রতি ভারতের দারিদ্র অর্থনৈতিক এবং লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
এই রিপোর্টের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, যে সমস্ত দেশে এখনও চরম অসাম্য রয়েছে ভারত তার মধ্যে অন্যতম। ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২১ সাল পর্যন্ত ভারতের ১ শতাংশ মানুষের হাতে জাতীয় আয়ের পাঁচ ভাগের এক ভাগ সম্পদ সঞ্চিত রয়েছে। সম্প্রতি দেশের আর্থিক উদারীকরণ এবং অর্থনৈতিক সংস্কারে ধনিক শ্রেণীর এই ১ শতাংশ মানুষ সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। এই ১ শতাংশ মানুষের আয়ের পরিমাণ ক্রমশ বেড়েছে, অন্যদিকে গোটা দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই আয় কমেছে।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, দেশের নিচের সারির অর্ধেকেরও বেশি মানুষের হাতে দেশের মোট সম্পদের মাত্র ১৩.১ শতাংশ রয়েছে। অর্থাৎ গত এক দশকে ভারতের ধনী যেমন আরও ধনী হয়েছে তেমনি দরিদ্র মানুষের দারিদ্র আরও বেড়েছে।
ওই রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, ভারতে লিঙ্গ বৈষম্যও যথেষ্ট উদ্বেগের। কারণ দেশের মোট আয়ে মহিলা শ্রমিকদের অংশ মাত্র ১৮ শতাংশ, যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম। তবে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে মহিলাদের অংশ গড়ে মাত্র ১৫ শতাংশ। একমাত্র এই হার চিনে কিছুটা বেশি। চিনে জাতীয় আয়ে মহিলাদের অংশ ২১ শতাংশ। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনা পরিস্থিতি ও কেন্দ্রের মোদী সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কার দেশে আর্থিক বৈষম্য বাড়িয়ে তুলেছে। সরকার যদি অবিলম্বে তাদের এই নীতি না বদলায় তবে দেশে এক চরম আর্থিক বৈষম্য তৈরি হবে। এই অবস্থা গোটা দেশের আর্থিক পরিকাঠামোর এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত বিপজ্জনক। ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এস্থার ডাফলোর মত বিশেষজ্ঞ।