বিশেষ প্রতিবেদন: মহালয়া মানেই ভোরবেলায় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠ। অন্যদিনের থেকে আজকের সকালটা এভাবেই শুরু হয়েছে বাঙালির। কাক পক্ষী নয়। নেসাল টোনের ওই উদ্দীপ্ত কণ্ঠে।শুনে। রেডিও সারা বছর না বেরোলেও এই মানুষটার জন্য একদিন হলেও প্রত্যেক বাঙালি বাড়িতে বেরোয় রেডিও। এর কোনও পরিবর্তন নেই। আদি অনন্তকাল ধরে যেন মহালয়ার ভোরটা এমনই করে দিয়েছেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। তাঁরই অবয়ব পেপার কাটিংয়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলে শ্রদ্ধা জানাল হুগলি জেলার সিঙ্গুর গ্রামের যুবক সৌরভ আদক।
সূক্ষ্ম হাতের কাজ করেন সৌরভ। কীভাবে এই কাজ করেন? তিনি বলেন , ‘আগে ছবিটা হাতে এঁকে নিই। তারপরে আসল কাজটা করি। জালের উপর ট্রেনের টিকিট রেখে তার উপরে ফর্ক দিয়ে কাটি। তবে বেশি কাজটা হয় কাঁচি আর ব্লেড দিয়ে’।
এমন পেপার কাটিংয়ের কাজ সৌরভ গত বছর আটেক ধরেই করছেন। পেপার কাটিংয়ের জন্য কাজ বেছে নিয়েছেন ট্রেনের টিকিটকেই। এর উপরেই হাতের সমস্ত কারিকুরি তার। তিনি বলেন , ‘ট্রেনের টিকিটের কাগজ অত্যন্ত ভাল মানের হয়। তাই কাজ করতে সুবিধা হয়। আর ট্রেনের টিকিট মানুষ কাজ হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই ফেলে দেয়। এতে পরিবেশের ক্ষতি হয়। ফেলে দেওয়া টিকিট পুনরায় ব্যবহারের ফলে প্রকৃতির উপকার হয়।’
সাড়ে তিন ইঞ্চি থেকে ছয় ইঞ্চির সমস্ত রেল টিকিটের উপর কাজ করেন সৌরভ। হাতের কারিকুরিতে ফুটিয়ে তুলেছেন মমতা, মোদি, মেসি, রোনাল্ডো থেকে শুরু করে মহম্মদ রফি , সোনু নিগম, রুপম ইসলাম ,উত্তম কুমার, ধোনি, সৌরভ, মাইকেল জ্যাকসন, স্কারলেট জোহানসন, কেট উইনস্লেটদের।
ভবিষ্যৎ ভাবনা কি ? সৌরভ জানিয়েছেন, ‘এই পেপার কাটিং আমার প্যাশন। সেটাকে পেশা করার জন্য পরিকল্পনা এখনই নেই তবে পেশার দিকে ভাবনা এগোচ্ছে কারণ কিছু উপার্জনও হচ্ছে এই কাজ থেকে। প্রদর্শনী করেছি। সেখান থেকেও কিছু অর্থ আসে। তবে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র আপাতত মন দিয়ে প্যাশনটাকে ধরে রাখতে চাইছেন। এটাই প্রাথমিক পরিকল্পনা।