বিশেষ প্রতিবেদন: সেলুনে চুল কাটতে গিয়ে চুলের সেটিং ঘেঁটে ‘ঘ’। রেগে দু’চারখানা বিশেষণ আওড়াতে পারেন, আর গাঁট গচ্ছা শ’খানেক টাকা। পুরো বিষয়টাই আপনার খরচার খাতায়। একই ঘটনা, কিন্তু মডেলকে দু’কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঘটনা দিল্লির। চুল ভুল কাটা এবং খারাপ করে দেওয়ার দায়ে এই বিপুল পরিমাণ অর্থের মাশুল দিতে হবে দিল্লির আইটিসি মৌর্য হোটেলের স্যালনকে। এমনই নির্দেশ কনজিউমার ডিসপুটস রিড্রেসাল কমিশন বা এনসিডিআরসির। মূল ঘটনা ২০১৮’র এপ্রিল মাসের। এখন তার ফল পেতে পারেন আশনা রায় নামে এক মডেল। অবশ্য এই সময়ে তার কেরিয়ার খরচার খাতায় চলে গিয়েছে বলে দাবী করেছেন তিনি, সৌজন্যে হোটেল চেনের স্যালন। তাই তিনি দাবী করেছিলেন তিন কোটির ক্ষতিপূরণ। তিন বছর কোর্টের মনে হয়েছে সত্যি ই বড় ক্ষতি হয়েছে মডেলের। তাই নির্দেশ দু’কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের।
আশনা রায় নামের ওই মডেল নিজের লম্বা চুলের জন্য মডেলিং জগতে নজর কেড়েছিলেন। তিনি চুল কীভাবে ভালো রাখা যায় এমন সব পণ্যেরই মডেল ছিলেন। ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল তিনি তাঁর নতুন হেয়ারকাটের জন্য গিয়েছিলেন দিল্লির আইটিসি মৌর্য হোটেলের স্যালনে। তাঁর অভিযোগ ছিল, চুল ভুলভাল কাটে ওই স্যালন। দাবী, ওই ঘটনার পরে আশনা সেলুনের ম্যানেজারকে এই বিষয়ে অভিযোগ জানান। তখন ম্যানেজার তাঁকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, নিখরচায় হেয়ার ট্রিটমেন্ট করে দেওয়ার।
মডেলের দাবি ছিল, হেয়ার ট্রিটমেন্টে যে কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়েছিল, তা তার চুলের আরও ক্ষতি করে দেয়। তাঁর বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়, কারণ দেশের প্রথম সারির একাধিক সংস্থা তাঁর বড় চুলের জন্যই তাঁর সঙ্গে মোটা অঙ্কের বিজ্ঞাপনের চুক্তি করেছিল। তা ছোট এবং খারাপ হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বড় আর্থিক ক্ষতি হয় তাঁর। মডেলের দাবী, ওই স্যালন তাঁর বড় মডেল হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়। এই ঘটনা তাঁকে অবসাদগ্রস্ত করে তোলে। তিনি বাধ্য হন মডেলিং কেরিয়ার থেকে সরে আসতে। এই অভিযোগ নিয়েই তিনি এনসিডিআরসি’র দ্বারস্থ হয়েছিলেন। দীর্ঘ তিন বছর পর কমিশনের নির্দেশ ওই মডেলকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং তা দিতে হবে আট সপ্তাহের মধ্যে।
এদিকে হোটেল কর্তৃপক্ষের দাবী, মডেল যে কারণে এই ক্ষতিপূরণ দাবী করেছেন তা পুরোপুরি ভাবে সাজানো এবং অতিরঞ্জিত ঘটনার উপর ভিত্তি করে সাজানো। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হোটেলের দুর্নাম করার চেষ্টা করছেন ওই মডেল।