বিশেষ প্রতিবেদন: তিনি একমাত্র ফুটবলার যিনি কলকাতা মাঠে তিন প্রধানের জার্সিতে অধিনায়ক হয়েছেন। ভারতীয় সিনিয়র দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি।স্ট্রাইকারের পা থেকে এসেছে ক্লাব ফুটবলে ২৫০ এর বেশী গোল। তিনি দীপেন্দু বিশ্বাস (Dipendu Biswas)।
দীপেন্দূর বাবা বাঙালী আর মা ছিলেন কেরালার বাসিন্দা। স্বাভাবিকভাবেই তার জিনের মধ্যেই ছিল ফুটবল এবং রাজনীতি। আর দুটোই একসঙ্গে করেছেন তিনি নিজে। ১৯৯৬ সালে জামশেদপুরের টাটা ফুটবল একাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষে মোহনবাগানে যোগদান।
দু’বছর (১৯৯৬, ১৯৯৭) সেখানে খেলে ১৯৯৮য়ে ইস্টবেঙ্গলে চলে যান। ১৯৯৯ সালে আবার মোহনবাগানে ফেরেন। সেখান থেকে দু’ বছরের জন্য (২০০০, ২০০১) ইস্টবেঙ্গলে ফেরা। ২০০২ আর ২০০৩ মহমেডানে কাটিয়ে ২০০৪য়ে তিনি মাহীন্দ্রা ইউনাইটেডে যোগ দেন। ২০০৫ আর ২০০৬য়ে মোহনবাগানে ফিরে আসেন। আর ২০০৭য়ে আবার খেলেন ইস্টবেঙ্গলে। ২০০৮য়ে যান জর্জ টেলিগ্রাফে। ২০০৯য়ে তৃতীয়বারের জন্য যান মহমেডানে এবং ২০১০য়ে সেখানে খেলে ২০১১তে ভবানীপুরে যান।
২০১২তে আবার ফেরেন মোহনবাগানের হয়ে খেলার জন্য। ২০১৩তে আবার তিনি মহমেডানে যান। ২০১৪ অবসরে থেকে, ২০১৫তে টালিগঞ্জ অগ্রগামীর হয়ে খেলেন, কোচ হবার অফার ফিরিয়ে দিয়ে। প্রায় দুই দশক ভারতীয় ফুটবলে দাপিয়েও তখনো ফুটবলের নেশায় বুঁদ ছিলেন তিনি৷ ২০১৬তে মহমেডানের হয়ে শেষবারের মত খেলেন তিনি। ভারতের হয়ে খেলেছেন প্রাক অলিম্পিক, প্রাক বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ, সাফ গেমস আর আফ্রো-এশিয়ান গেমসে।
২০১৭তে মহমেডানের ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান হন তিনি। ২০১৯য়ে তাদের কোচ হন আর ২০২০তে তিনি ছিলেন একই সঙ্গে মহমেডানের সেক্রেটারী ও টেকনিকাল ডিরেক্টর। তারই অধীনে মহমেডান দল ৮ই অক্টোবর ২০২০ থেকে আইলীগের ২য় ডিভিসনে খেলতে নেমেছিল কলকাতায়।
রাজনীতির ময়দানে প্রবেশ ২০১৪সালে। বসিরহাট থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে লড়ে বিজেপি-র শমীক ভট্টাচার্যর কাছে হেরে যান তিনি। ২০১৬র বিধানসভা ভোটে সেই বিজেপি-র শমীক ভট্টাচার্যকেই ২০০০০ ভোটেরও বেশী ব্যবধানে হারিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে ৫ বছরের জন্য বিধানসভা সদস্য হন তিনি। তারপর বহু পথ পেরিয়ে এখন, এই মুহূর্তে তিনি রাজনীতির পেনাল্টি বক্সের বাইরে।
দীপেন্দু জাতীয় লীগ জেতেন মোট ৩ বার, যার মধ্যে ২বার ছিল মোহনবাগানের হয়ে (১৯৯৭ – ১৯৯৮ আর ১৯৯৯ – ২০০০) আর ১বার ইস্টবেঙ্গলের হয়ে (২০০০ – ২০০১)। ২০১৪ সালে তার নিজস্ব ওয়েবসাইট চালু হয়। পি কে ব্যানার্জীর প্রিয় ছাত্র তাকে নিয়ে প্রবল আন্তঃক্লাব টানাটানি প্রমাণ করে ভারতীয় ফুটবলে তার কার্যকারিতা।