Durga Puja 2021: দুর্গতির গ্রামে আসেন না দুর্গা, পুজোর গন্ধ নিয়ে পৌঁছে গেল ওরা

বিশেষ প্রতিবেদন: ওদের জামা হয় না, মাথায় নতুন ক্লিপ দেওয়া হয় না। জীবন জুড়ে সংগ্রাম। এই পুজোর সময়ে ওদের দ্বীপে একটা দুর্গাপুজোও হয় না। কানে…

barna parichay

বিশেষ প্রতিবেদন: ওদের জামা হয় না, মাথায় নতুন ক্লিপ দেওয়া হয় না। জীবন জুড়ে সংগ্রাম। এই পুজোর সময়ে ওদের দ্বীপে একটা দুর্গাপুজোও হয় না। কানে আসে না ঢাকের শব্দ। তবু মন মাতে শরতিয়া মেঘ দেখে। ইচ্ছা করে নতুন জামার গন্ধ নিতে। সেই সুযোগ করে দিল পুরনো কলকাতার গল্প। ফেসবুক গ্ৰুপের তৈরি স্কুলের গরীব ছাত্রছাত্রীরা পেল নতুন জামা।

এই প্রসঙ্গে পিকেজি’র অন্যতম প্রধান সদস্য জয়ন্ত সেন বলেন, “বাচ্চাগুলোর মনের উত্তেজনা আন্দাজ করতে পারছি। ছোটবেলায় আমাদেরও হতো। বাবা-মা গেছেন পুজোর বাজার করতে কোনও এক ছুটির দিন বিকেলে। সামনেই গড়িয়াহাট। বা কলেজস্ট্রীটের জুতোর মার্কেটে। উত্তেজনায় এ’ঘর ও’ঘর। কী আনবে, কেমন রঙের জামা-প্যান্ট হবে…। জুতোটা আমার নটিবয়’র মতো হবে না তো…।

nayachar

নয়াচরে আমাদের বর্ণপরিচয় স্কুলের বাচ্চাগুলোর একই অবস্থা। দিদিমণির ফোন এলে ওরাও ঝাঁপিয়ে পরে জানতে চাইছিল কবে আমরা আসবো ওদের জন্য নতুন জামাকাপড় নিয়ে এই দুর্গা পুজোয়। তা নিয়েই, আমরা কাকভোরে, পৌঁছে যাই নয়াচরে। নিয়ে যাই ছেলেদের জন্য জামা, প্যান্ট, মেয়েদের জন্য ফ্রক, স্কার্ট, দিদিমণি ও রান্নার মাসীদের জন্য শাড়ি। এছাড়া ওরা কাল দুপুরে মাংস-ভাত-পায়েস খাবে, মিড-ডে-মিল।ছেলেমেয়েদের জামা তৈরি করে আনা হয়েছিল সাগরদ্বীপ থেকে। কিছু নতুন পোশাক দিয়েছে বন্ধু পিনাকী চক্রবর্তী।”

একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আসন্ন দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে ওঁদের উত্তেজনার পারদ ক্রমশঃ ওপরের দিকে চড়ছিল। তবে এদের চাহিদা বড্ড কম। অনেকেরই এখনও পুজোর জামাকাপড় বাবা-মায়েরা কিনে দিতে পারেন নি। নয়াচর দ্বীপে কোথাও হয় না দুর্গাপুজো। তাই বাচ্চাগুলোর মন পড়ে থাকে হুগলি নদীর ওপারে হলদিয়ায়, একটু ঠাকুর দেখার আশায়।

কেউ যায় এক বেলার জন্য, কেউ বা ২-৫ দিনের জন্য। নতুন স্কুল, অনেক বন্ধু হয়েছে এদের। বাচ্চা মেয়েরা একটু সাজগোজ করে ঠাকুর দেখতে চায়। মাথায় বাহারি ব্যান্ড, ঠোঁটে লিপস্টিক দেওয়ার খুব ইচ্ছে এদের। আবার দ্বীপের কোথাও ফুচকা পাওয়া যায় না বলে ওপারে হলদিয়ায় গিয়ে একটু ফুচকা খাওয়ার শখও রয়েছে। ছেলেগুলো একে অপরের কাঁধে হাত রেখে বন্ধু হয়ে একটু ঘুরে বেড়াতে চায়। ব্যাস, এইটুকুই ইচ্ছে ওদের। ছোট ছোট এই ইচ্ছে নিয়েই ওরা বড় হয়ে উঠুক। সেই ইচ্ছাপূরণ করার চেষ্টা করছি আমরা”।