#Bangladesh 1971 war
প্রসেনজিৎ চৌধুরী: তখন মাঠ ঘাট কচুরিপানা ধানক্ষেতের আড়ালে পাকিস্তানের সেনার বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই করছিলেন বাংলাদেশি গেরিলারা। এই ‘মুক্তিযোদ্ধা’দের সদর কার্যালয় ছিল কলকাতায়। ঐতিহাসিক সেই ৮ নম্বর থিয়েটার রোডের বাড়ি (বর্তমান সেক্সপিয়ার সরণী) থেকে ‘মুজিবনগর সরকার’ (প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার) পরিচালিত হতো। বাড়িটিতে সংগ্রহশালা বানাতে অধিগ্রহণ করতে চায় বাংলাদেশ সরকার। এই বিষয়ে ভারতের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে ঢাকার তরফে।
এই বাড়িতেই ছড়িয়ে আছে ১৯৭১ সালের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার পরিচালনার ইতিহাস। বাড়িটি আরও একটি কারণে বিখ্যাত। বাড়িটি ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামী অরবিন্দ ঘোষের(ঋষি অরবিন্দ) মামার বাড়ি। এই বাড়িতেই তাঁর জন্ম হয়। এই বাড়ির নাম অরবিন্দ ভবন।
রবিবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দেরাইস্বামী বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বৈঠক হয়। এই বৈঠকেই উঠেছে কলকাতার ঐতিহাসিক ৮ নম্বর থিয়েটার রোডের বাড়ির প্রসঙ্গ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অনুরোধ করেন, দ্রুত বাড়িটি যেন হস্তান্তর করা হয়।
কলকাতার এই বাড়ি থেকেই ১৯৭১ সালের টানা নয় মাসের বেশি সময় ধরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল। অস্থায়ী সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, সেনাপ্রধান কর্নেলসন এমজিএ ওসমানি, অর্থমন্ত্রী মনসুর আলি সহ মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডাররা বৈঠক করতেন।
পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা শুরু হয়েছিল। সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসা বহু বুদ্ধিজীবী, লেখক শিল্পীরা কলকাতাতেই আশ্রয় নিয়েছিলেন। বিবিসি জানাচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারত সরকার ও প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ কেন্দ্র হিসেবে ছিল এই বাড়ি। প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারকে এই ভবন দিয়েছিল ভারত সরকার।
বিবিসি জানাচ্ছে কলকাতার ৮ নম্বর থিয়েটার রোডে (বর্তমান শেক্সপিয়ার সরণী) অরবিন্দ ভবন নামের বাড়িটিতে নেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কোনও স্মৃতিফলক। তবে অরবিন্দ ভবনের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাস জড়িত। ফলে বাংলাদেশ সরকার বাড়িটি অধিগ্রহণ করতে আগ্রহী।
ভারতীয় হাইকমিশনারকে দেওয়া বার্তায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী যুদ্ধের সময় ভারত সরকারের সহায়তার কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দ্বেরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক পরীক্ষিত। দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন দ্বেরাইস্বামী।