নিউজ ডেস্ক: শিক্ষায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সাহসিকতায় নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস। আর প্রশাসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক এই কায়দাতেই বিধানসভা ভোটের আগে বিরোধীদের বিঁধেছিলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। অনেকে বাঙালিই রাজনীতির ছোঁয়াচ এড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলে বলেন শিক্ষায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সাহসিকতায় নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস। আর খেলায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু সত্যিই কি রবীন্দ্রনাথ-বিবেকানন্দ-সুভাষচন্দ্রের সঙ্গে একাসনে বসানো যায় বাঙালির স্পোর্টস আইকনকে? এই নিয়েই এবার জোর তরজা সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ঘটনার সূত্রপাত একটি পরিচিত ফেসবুক গ্রুপে, যার মেম্বার সংখ্যা প্রায় ৫৩ হাজার। সুতনু দে নামের জনৈক নেটনাগরিক একটি পোস্ট করেন বাঙালির আইকনদের নিয়ে। চারটি ছবির ওই কোলাজে প্রথম ছবিটিই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। বাকি তিনজন হলেন স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সুভাষচন্দ্র বসু। তিনজনই শুধু বাঙালির নন, গোটা দেশের পূজিত। রক্তমাংসের মানুষ হলেও যারা মহাপুরুষ, প্রাতঃস্মরণীয়। অন্যদিকে খেলার দুনিয়ায় বাঙালিকে এক অন্য ছবি দেখিয়েছেন সৌরভ। ক্রিকেটার বা জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে অফুরন্ত কৃতিত্বই শুধু না, বেহালার ছেলের লর্ডসের ব্যালকনিতে খালি গায়ে জামা ঘোরানো বা দুবাইয়ের স্টেডিয়ামে পায়ের ওপর পা তুলে বিশ্বের ক্রিকেট শাসন করতে দেখেও রোমাঞ্চিত হয় বাঙালিরা। কিন্তু তারপরেও তাকে কোনওভাবেই কি ওপরের তিনজনের সঙ্গে বসানো যায়? এই নিয়েই দ্বিধাবিভক্ত নেটদুনিয়া।
অনেকেই জানিয়েছেন, সৌরভ নিজের জায়গায় সেরা। দেশকে বহু সাফল্য এনে দিয়েছেন। বেটিং করে অস্তাচলে চলে যাওয়া ভারতীয় ক্রিকেটের আকাশে নতুন সুর্যোদয় ঘটিয়েছেন। ফলে তাঁকে মহাপুরুষদের সঙ্গে তুলনা করাই যায়। যদিও বেশীরভাগ নেটিজেনই ভিন্নমত পোষন করেছেন। বিসিসিআই প্রেসিডেন্টকে বাঙালির তিন আদর্শের সঙ্গে তুলনা করাকে একেবারেই ভালো চোখে নেননি তাঁরা। রীতিমতো একহাত নিয়েছেন পোস্টদাতাকে। বিধানসভা ভোটের আগে গুঞ্জন উঠেছিল ভারতীয় জনতা পার্টিতে যাচ্ছেন সৌরভ, যা ভালোভাবে নেননি তাঁর বহু অনুগামীই। তা শেষে সত্যি না হলেও বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হওয়ায় সৌরভ যথেষ্ট ঘনিষ্ট অমিত শাহ’র পুত্র জয় শাহের (বিসিসিআই সচিব)। ফলে শুধু খেলার রেকর্ডে নয়, প্রতিনিয়ত সৌরভকে কাঁটাছেড়া করা হচ্ছে রাজনৈতিক আঙ্গিকেও। পোস্টের বিরোধীতা বাড়ার সেটাও অন্যতম কারণ।