তিমিরকান্তি পতি, বাঁকুড়া: আর মাত্র ক’টা দিনের অপেক্ষা। তারপর পুজোর আনন্দ উৎসবে মেতে উঠবে আমবাঙালি। কিন্তু এতোসবের পরেও মন ভালো নেই ‘টেরাকোটার গ্রাম’ পাঁচমুড়ার মৃৎ শিল্পীদের। করোনা আবহে গত বছরও পুজোয় উল্লেখযোগ্য তেমন কোনও বরাত তারা পাননি, এবারও তাই। ফলে চরম সমস্যায় এখানের শিল্পীরা।
টেরাকোটার হাতি, ঘোড়া থেকে ঘর সাজানোর নানান জিনিসপত্র, এমনকি পোড়া মাটির গহনা তৈরীতেও পাঁচমুড়ার কুমোর পাড়ার শিল্পীদের বিশ্বজুড়ে ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে। একটা সময় ‘পাঁচমুড়ার ঘোড়া’ আন্তর্জাতিকস্তরেও সদর্পে দাপিয়ে বেড়িয়েছে। আর এই জায়গা থেকেই মণ্ডপ সজ্জা থেকে প্রতিমা সব বিষয়েই কলকাতা সহ রাজ্য জুড়ে ব্যাপক চাহিদা ছিল মৃৎশিল্পীদের।সেই সুযোগে বাড়তি কিছু রোজগারের সুযোগ তৈরী হতো তাঁদের।
কিন্তু করোনা এসে সব আশাতেই জল ঢেলে দিয়ে গেল। এবছর এখনো পর্যন্ত এখানকার একজন শিল্পীও প্রতিমা তৈরী থেকে মণ্ডপ সজ্জার ডাক পাননি। ফলে চরম হতাশা গ্রাস করছে এখানকার এই শিল্পীদের।
মৃৎশিল্পী ও শিক্ষক বিশ্বনাথ কুম্ভকার বলেন, করোনা আবহে শিল্প ও শিল্পী দু’জনই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। পুজোর অর্ডার আমরা এখনো কেউ পাইনি। এরপর পেলে বড়কাজে সমস্যা হবে। কারণ টেরাকোটা শিল্প কর্ম ফুটিয়ে তোলা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। আর সেই সময়টা এখন হাতে নেই, কারণ পুজো প্রায় দোরগোড়ায়। এখনো অর্ডার এলে ছোটো প্রতিমা বা মণ্ডপ সজ্জার কাজ সঠিক সময়ে করে ফেলতে পারবেন বলে তিনি জানান।
আর এক শিল্পী ভূতনাথ কুম্ভকারও একই কথা বলেন। তাঁর কথায় করোনায় সব ওলট পালট করে দিল। পুজোর মণ্ডপ সজ্জা বা প্রতিমা তৈরী করে মোটা অঙ্কের রোজগার হতো। কিন্তু এবার পুজো কমিটির তরফে তেমন কোন উৎসাহই চোখে পড়ছেনা। ফলে তারা পুজোর কাজ আদৌ পাবেন কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত আছেন বলে তিনি জানান।