🅾🅵🅵🅱🅴🅰🆃: মল্লভূম বিষ্ণুপুরে পটেশ্বরী ‘বড় ঠাকরুণ’ নামই তো চলে

395
Unique durga art still exist in heritage city Bishnupur

তিমিরকান্তি পতি, বাঁকুড়া: সময়ের দাবি মেনে বেড়েছে পুজোর জৌলুস। থিম পুজোয় মেতেছে আম বাঙালী। কিন্তু সে সবকিছুকে ছাপিয়ে, গড্ডলিকা প্রবাহে গা না ভাসিয়ে প্রাচীণ ঐতিহ্য আর পরম্পরা মেনে বিষ্ণুপুর মল্ল রাজবাড়ি সহ বেশ কিছু জায়গাতে পটচিত্রেই পূজিতা হন দেবী দুর্গা।

বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করে কাপড়ের তৈরী পটে সুনিপুন দক্ষতায় বংশ পরম্পরায় দেবী দুর্গার প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলার কাজ করছেন বিষ্ণুপুরের ফৌজদার পরিবার। বর্তমান সদস্যরা হাতে তুলে নিয়েছেন তুলি। পুজোর আগে এই মুহূর্তে তাঁদের ব্যস্ততার শেষ নেই। নাওয়া-খাওয়া ভুলে চলছে অবিশ্রান্ত তুলির টান। মনন আর ধৈর্যের মিশেলে এঁকে চলেছেন পটের দুর্গা।

Unique durga art still exist in heritage city Bishnupur

হাতে গোনা কয়েকটা দিনের মধ্যেই যে তাঁদের এঁকে ফেলতে হবে ছ’টি পটের দুর্গা। বিষ্ণুপুর মল্ল রাজবাড়ির পাশাপাশি কয়েকটি সাবেকি পরিবারেও যাবে এখানকার পট দুর্গা। এই তালিকায় বিষ্ণুপুর রাজবাড়ির পাশাপাশি শহরের কাদাকুলি, মহাপাত্র বাড়ি, আইকাত বাড়ি, চক্রবর্ত্তী বাড়ি, ভট্টাচার্য বাড়ি ও কুচিয়াকোল রাজবাড়ির নাম রয়েছে।

চলতি বছরে অধিকাংশ পরিবারের দুর্গার পটচিত্র তৈরির বরাত পেয়েছেন বিষ্ণুপুরের ফৌজদার পরিবার। পরম্পরা মেনে মল্ল রাজবাড়ির জন্যই তিনটি পটের দুর্গা তৈরি করবেন তাঁরা। যেমন ‘বড় ঠাকুরুনে’র পটচিত্র যাবে জিতাষ্টমীতে। তারপর নিয়ম মেনে ‘মেজো ঠাকুরণ’ ও ‘ছোট ঠাকুরণে’র পট আঁকা শুরু হবে।

পট চিত্র আঁকার এই পারিবারিক ঐতিহ্য কতো দিন টিকে থাকবে, জানেননা শিল্পী শীতল ফৌজদার। এবিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আক্ষেপের সূর ঝরে পড়ে তাঁর গলায়। তিনি বলেন, এই কাজে তেমন রোজগার নেই, ফলে বর্তমান প্রজন্মের কেউই আর এই কাজে আগ্রহী নয়। একমাত্র ভাইপোকে তিনি নিজে এই পটচিত্র আঁকার কাজ শিখিয়েছিলেন কিন্তু সেও ‘পেটের দায়ে’ অন্যকাজে ব্যস্ত। ফলে হয়তো একদিন ইতিহাস হয়ে যাবে ফৌজদারির পরিবারের পটচিত্র তৈরীর বিষয়টিও বলে তিনি জানান।