নিউজ ডেস্ক: গোটা দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। চলতি করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই দেশজুড়ে চলছে উৎসবের মরসুমে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার মানুষকে করোনা বিধি মেনে উৎসবে সামিল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, ঘরে বসে উৎসব পালন করুন।
কিন্তু কেন্দ্রের সেই নির্দেশিকা বা করোনা বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শনিবার দিনভর বেনারসে ধুমধামের সঙ্গে পালিত হল ‘ভরত মিলাপ’ অনুষ্ঠান। হাজার হাজার মানুষ এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অধিকাংশের মুখেই মাস্ক ছিল না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা তো চিন্তাই করা যায় না। তবে বিশেষজ্ঞরা অনেকেই মনে করছেন, বেনারসবাসীকে এই ঘটনার জন্য কড়া মাসুল চোকাতে হবে।
চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী প্রতিবছরই দশমীর পরের দিন বেনারসে পালিত হয় এই অনুষ্ঠান। দীর্ঘ ১৪ বছর বনবাসে কাটিয়ে একাদশীর দিন রামচন্দ্র অযোধ্যায় ফিরেছিলেন। রামচন্দ্র এবং সীতাকে সসম্মানে অযোধ্যায় ফিরিয়ে এনেছিলেন ভাই ভরত। তাই এই দিনটি পবিত্র দিন হিসেবে উদযাপন করা হয়। এই দিনের অনুষ্ঠানকেই ‘ভরত মিলাপ’ বলা হয়ে থাকে। সেই অনুষ্ঠানে যোগী সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই যোগী সরকার এভাবে অনুষ্ঠানের ওপর কোনও বিধিনিষেধ জারি করেনি। কিন্তু যোগী সরকারের এই প্রশাসনিক ব্যর্থতা আগামী দিনে মানুষের পক্ষে বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, যেভাবে শনিবার বেনারসের নাতি ইমালি মাঠে হাজার হাজার ভক্তের ঢল নেমেছিল তার যথেষ্টই উদ্বেগের। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, একটি রথকে কাঁধে নিয়ে ওই মাঠের চারদিকে প্রদক্ষিণ করছেন ভক্তরা। তাদের কারও মুখেই মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা তো চিন্তাই করা যায় না। গোটা এলাকায় তিল ধারনের জায়গা নেই। বেনারসের বাইরে থেকেও বহু মানুষ এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। বেনারসের প্রতিটি হোটেলেই ঠাঁই নেই ঠাঁই নেই রব।
কেন্দ্রের করোনা বিধিকে উপেক্ষা করে যোগী সরকার কীভাবে এই অনুষ্ঠানের অনুমতি দিলো তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন, বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে যোগী সরকার সস্তায় কিস্তিমাত করতে চাইছে। সে কারণেই এই অনুষ্ঠানে জনসমাগমের উপর কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি।