🚨 Breaking: Welcome to Kolkata24x7 — fast, modern news theme…
Leaderboard Ad (728x90)

কে বলে বঙ্গের দুর্গাপূজা চার দিনের! মল্লভূমে ১৮ দিন হয়

By Business Desk | Published: September 30, 2021, 11:59 am
Ad Slot Below Image (728x90)

তিমিরকান্তি পতি, বাঁকুড়া: মল্ল রাজারা আর নেই, নেই রাজ্যপাঠ। ভাঙ্গাচোরা রাজবাড়ির দেওয়ালে কান পাতলে আজও যেন শোনা যায় মল্লরাজাদের প্রাচীণ ইতিহাসের পদধ্বনি। প্রাচীন রীতি ও ঐতিহ্য মেনে  বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মল্লরাজাদের দুর্গোৎসবের সূচনা হয়ে গেল। প্রাচীণ রীতি মেনে এদিন থেক শুরু হয়ে টানা ১৮ দিন চলবে পুজো।

‘পট পুজো’ই এখানকার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শহরের শাঁখারি বাজারের ফৌজদার পরিবারের সদস্যরা ধারাবাহিকতা মেনে আজও ফি বছর বড় ঠাকুরাণী, মেজ ঠাকুরাণী ও ছোটো ঠাকুরাণীর আলাদা আলাদা তিনটি পট আঁকেন। মন্দিরে দেবী মৃন্ময়ী প্রতিমার পাশেই নির্দিষ্ট জায়গায় এই তিনটি পট রেখে পুজো হয়।

বৃহস্পতিবার নবম্যাদি কল্প থেকে বড় ঠাকুরাণী অর্থাৎ দেবী মহালক্ষীর পুজো শুরু হলো। এদিন সকালে রাজবাড়ি সংলগ্ন রঘুনাথ সায়রে বড়ঠাকুরাণীর পটের স্নান পর্ব শেষে মন্দিরে প্রবেশের পর প্রথানুযায়ী তিন বার মূর্চ্ছা পাহাড়ে কামানের তোপধ্বণি দেওয়া হলো। পরে গর্ভগৃহে প্রবেশের মুহূর্তেও তোপধ্বণি দেওয়া হয়। পরে দেবীকে অন্নভোগ নিবেদনের সময় আরো তিনবার কামানের তোপধ্বণি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে বড় ঠাকুরাণীর পুজোর দিন থেকেই মল্ল রাজাদের প্রাচীণ এই রাজধানীতে শারদোৎসবের সুচনা হয়ে গেল।

durga puja of Mallabhum kingdom

প্রাচীণ প্রথানুযায়ী, দেবী পক্ষের চতুর্থীর দিন থেকে রাজপরিবারের মেজ ঠাকরুন অর্থাৎ দেবী সরস্বতী ও সপ্তমীর দিন থেকে ছোটো ঠাকরণী অর্থাৎ দেবী মহাকালীর পুজো শুরু হয়। বড়, মেজো ও ছোটো ঠাকরুণী এই তিনজনকেই দেবী মহামায়ার রুপ হিসেবে মল্লরাজাদের হস্ত লিখিত বলীনারায়নী পুথি অনুযায়ী পূজিতা হন।

৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দ, বাংলা ৪০৪ সাল, মল্লাব্দ ৩০৩ মল্লাব্দে তৎকালীন রাজা জগৎ মল্ল বিষ্ণুপুরে দেবী মৃন্ময়ী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। ইনি মল্ল রাজাদের কূলদেবী। অতীতে রাজাদের আমলে যে আড়ম্বর ছিল সময়ের দাবী মেনে তাতে কিছু ভাটা পড়লেও শহরবাসীর মধ্যে উৎসাহে ভাটা এতোটুকুও কমেনি, বরং বেড়েছে। অন্যান্য পুজো কালিকাপূরাণ মতে হলেও এই রাজ্যে একমাত্র বিষ্ণুপুর রাজ পরিবারে বলিনারায়ণী মতে দুর্গাপূজা হয় বলে দাবী করা হয়। একসময় এখানে পূজোয় বলি প্রথা চালু থাকলেও রাজা হাম্বির মল্ল বৈষ্ণব মতে দীক্ষা নেওয়ার পর চিরতরে বন্ধ হয়ে যায় বলি প্রথা।

তোপধ্বণির শব্দকে ব্রহ্ম হিসেবে ধরে সেই সময় থেকেই পাহাড়ের উপর কামানের তোপধ্বণির চালু বলে জানা গেছে। প্রাচীণ রীতি অনুযায়ী প্রতি বছর অষ্টমীর দিন থেকেই মন্দিরের গর্ভগৃহে অষ্ট ধাতু নির্মীত বিশালাক্ষ্মী ও নবমীর রাতে খচ্চরবাহিনী দেবীর পুজো হয়। বিজয়া দশমীতে দেবী মৃন্ময়ীর ঘট বিসর্জনের পর বড় ঠাকুরাণী, মেজ ঠাকুরাণী ও ছোট ঠাকুরাণীর ঘট বিসর্জন হয়। সব শেষে এই তিন ঠাকুরাণীর পট রাজবাড়ির অন্দর মহলে নিয়ে যাওয়া হয়।

সারা বছরের পাশাপাশি পুজোর এই দিন গুলিতে মন্দির নগরীতে বিষ্ণুপুরে পর্যটকদের ঢল নামে। প্রাচীন ঐতিহ্য আর পরম্পরার সাক্ষী থাকতে আজও জেলা, রাজ্য, দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশ থেকেও প্রচুর মানুষ ভীড় করেন। সব মিলিয়ে মল্লরাজারা থাকলেও তাঁদের কীর্তির জেরে বিষ্ণুপুর আছে বিষ্ণুপুরেই।

[custom_poll]
In-Article Ad (Responsive)
Ad Slot End of Article (728x90)

Related Articles