🚨 Breaking: Welcome to Kolkata24x7 — fast, modern news theme…
Leaderboard Ad (728x90)

হাসপাতালে রোগী-রাতজাগা আত্মীয়দের পেট ভরাচ্ছেন ‘হসপিটাল ম্যান’ পার্থ

By Sports Desk | Published: August 24, 2021, 11:15 pm
Ad Slot Below Image (728x90)

অনুভব খাসনবীশ: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা নগরলক্ষ্মী কবিতায় ‘বুদ্ধ’ জিজ্ঞেস করেছিলেন ‘ক্ষুধিতের অন্নদান-সেবার ভার কে নেবে?’ যা শুনে রত্নাকর শেঠ, ধর্মপালেরা পিছিয়ে গেলেও এগিয়ে এসেছিল এক ভিক্ষুণী, দায়িত্ব নিয়েছিল ‘খাদ্যহারা’দের খাদ্য বিলোবার। ভিক্ষুণীর বলা সেই,

‘কাঁদে যারা খাদ্যহারা       আমার সন্তান তারা;
নগরীরে অন্ন বিলাবার
আমি আজি লইলাম ভার।’

– কথাগুলিরই যেন বাস্তবায়ন করে চলেছেন পার্থ কর চৌধুরী, কলকাতার ‘হসপিটাল ম্যান’।

চার বছরেরও বেশি সময় ধরে খাদ্যহীনদের মুখে বিনামূল্যে খাবার তুলে দিচ্ছেন পেশায় পুলকার চালক পার্থ কর চৌধুরী। কলকাতা শহরের শেঠ শুখলাল কারনানী মেমোরিয়াল হাসপাতাল অর্থাৎ পিজি হাসপাতাল, শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল এবং চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতাল, তিন সরকারী হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষারত রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়দের খাবার দেন তিনি। তাঁদের জন্যই দু’বেলা খাবার নিয়ে হাসপাতালের গেটে পৌঁছে যান পার্থ। ভালোবেসে তিলোত্তমা তাঁকে ডাকে ‘হসপিটাল ম্যান’ বলে।

আরও পড়ুন ভারতীয় বায়ুসেনার জনকের নামেই রয়েছে জনপ্রিয় ফুটবল কাপ

৫১ বছরের পার্থর বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ মা, বাবা, স্ত্রী ও এক মেয়ে। নিজে অসুস্থ হয়ে ভরতি হয়েছিলেন শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে। চিকিৎসারত অবস্থাতেই দেখেছিলেন কলকাতার সরকারী হাসপাতালে রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়দের দুরবস্থা। বেড না পেয়ে হাসপাতালের বাইরেই পড়ে থাকে অনেক রোগী, বিনিদ্র রাত্রিযাপন করেন তাঁদের আত্মীয়রা। দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীদের পরিজনেরা শুধু টাকার অভাবেই নয়, অব্যবস্থাতেও খাবার জোটেনা অনেকের। তা দেখার পরেই তাঁদের খাওয়ানোর সঙ্কল্প নেন তিনি। টানা চার বছর ধরে তাঁর একক প্রয়াসেই চলছে সেই সঙ্কল্পের বাস্তবায়ন। সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “জলপাইগুড়ির অ্যাম্বুলেন্স দাদা করিমূল হক, বীরভূমের ডাক্তার সুশোভন ব্যানার্জি (এক’টাকার ডাক্তার), আউশগ্রামের সুজিত চট্টোপাধ্যায় (দু’টাকার মাস্টারমশাই) আমাদের পথপ্রদর্শক।”

May be an image of one or more people and people standing

প্রথমদিকে শহরের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট থেকে অতিরিক্ত খাবার সংগ্রহ করে পৌঁছে যেতেন হাসপাতালের গেটে। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর রেস্টুরেন্টগুলি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধা এসেছিল তাঁর কাজে। যদিও তাতে না থেমে নেমেছেন নতুন উদ্যমে। করোনার সময় শুধু হাসপাতালে রোগী-পরিজনদেরই খাবার দেননি, দায়িত্ব নিয়েছেন বহু পরিবারের কাছে মাসের রেশন পৌঁছে দেওয়ারও। স্থানীয় বহু পরিবারের কাছেই অতিমারীর সময়ে কার্যত ‘মসিহা’র মতোই পাশে দাঁড়িয়েছেন কালীঘাটের এই ‘যুবক’।

May be an image of one or more people and people standing

প্রথমে খাবার নিয়ে যেতেন নিজের পুলকার করেই, কয়েক মাস আগে এক শুভাকাঙ্ক্ষী একটি টোটো গিফট করেছেন। বর্তমানে সেটি করেই পৌঁছে যান তাঁর অপেক্ষায় বসে থাকা লোকেদের কাছে। খাবার দেওয়া ছাড়াও নিয়মিত করেন একটি স্বাস্থ পরীক্ষা শিবিরও। বিনামূল্যে স্বাস্থ পরীক্ষা, ওষুধ দেওয়া হয় সেখানে। করোনার সময় লোকের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নিজের খরচায় কিনে ফেলেছেন অক্সিজেন সিলিন্ডার, কনসেনট্রেটারও। নিজেই সিলিন্ডার নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন রোগীর বাড়িতে। আর্তের সেবায় প্রায় অর্ধেক দশক কাটিয়ে ফেললেও এখনও তাঁর ভাগ্যে জোটেনি কোনও সরকারি সাহায্য বা পুরস্কার। পার্থর কথায়, ‘বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমার কথা লোকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। এটাই অনেক। এছাড়া কয়েকজন কিছু সাহায্যও করছে। তাছাড়া কিছুর আশা আমি আর করি না।’

[custom_poll]
In-Article Ad (Responsive)
Ad Slot End of Article (728x90)

Related Articles