🚨 Breaking: Welcome to Kolkata24x7 — fast, modern news theme…
Leaderboard Ad (728x90)

সলিম আলী: দ্য বার্ডম্যান অব ইন্ডিয়া

By Kolkata24x7 Desk | Published: November 13, 2021, 1:17 pm
Salim Ali: The Birdman of India
Ad Slot Below Image (728x90)

বিশেষ প্রতিবেদন: উপমহাদেশের বিখ্যাত পাখিবিশারদ সলিম মঈজুদ্দিন আব্দুল আলী সংক্ষিপ্ত নাম সলিম আলী নামেই পাখী ও প্রকৃতি প্রেমিকদের কাছে অধিক পরিচিত। ‘দ্য বার্ডম্যান অব ইন্ডিয়া’ বা ‘ভারতের পাখিমানব’ নামে খ্যাত এই পাখি বিজ্ঞানীর জন্ম ১৮৯৬ সালের ১২ নভেম্বর, ব্রিটিশ ভারতের মুম্বাইয়ের সুলাইমানি বোহরা গোত্রের এক মুসলিম পরিবারে। জন্মদিনে তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। উল্লেখ্য যে, ১৯৮৭ সালের ২৭ জুলাই ৯০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন ভারতের এই পাখি মানব।

ভারতে তিনিই প্রথম পাখির ওপর নিয়মতান্ত্রিক জরিপ পরিচালনা করেন। তার রচিত বইগুলো পরবর্তী সময়ে পক্ষীবিজ্ঞানের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখে। ভারতে আধুনিক অর্নিথোলজি বা পাখিবিজ্ঞানের অন্যতম রূপকার তিনি। ভারতের তো বটেই, সারা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পাখি বিশারদ ও প্রকৃতিপ্রেমীদের মধ্যে তিনি একজন। তিনিই প্রথম ভারতবর্ষের পাখিদের উপর নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে জরিপ পরিচালনা করে তাদের লিপিবদ্ধ করেন।

Salim Ali: The Birdman of India

শিশুকালেই খেলনা এয়ারগান দিয়ে চড়ুই শিকার করার সূত্র ধরে তাঁর সাথে পরিচয় হয় বোম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির তৎকালীন সচিব ওয়াল্টার স্যামুয়েল মিলার্ডের। মিলার্ড সলিম আলীর উপর খুশি হয়ে তাঁকে পাখি সম্পর্কিত কিছু বই পড়তে দেন, পাশাপাশি পাখি সম্বন্ধে জ্ঞানদান করেন। নিজের আত্মজীবনীতে মিলার্ডের সাথে এ পরিচয়কেই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন সলিম আলী। প্রথম জীবনে তাঁর পাখি শিকারের প্রতি ঝোঁক থাকলেও পরবর্তীতে তা পাখি ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসায় রূপ নেয়। পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দার মির্জার সাথেও শিকার করেছিলেন তিনি।

গিরগামের জনানা বাইবেল মেডিকেল মিশন গার্লস হাইস্কুলে সলিমের প্রাথমিক পড়াশোনা। পরবর্তীকালে বোম্বের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন তিনি। ১৯১৩ সালে বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কলেজে ওঠার পর প্রথম বর্ষেই তিনি ঝরে পড়েন। এ সময় বার্মা চলে আসেন পারিবারিক ওলফার্ম (এক ধরনের ধাতু) খনি দেখাশোনার জন্য। পরে ভারতে ফিরে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ফাদারের উৎসাহে প্রাণিবিদ্যায় ভর্তি হন। এছাড়া গতানুগতিক পড়াশোনার দিকে তাঁর কখনোই আগ্রহ ছিল না। জীবিকার তাগিদে তিনি মিয়ানমারে পাড়ি জমান ও পরবর্তীতে জার্মানি ভ্রমণ করেন। এ সময় এরউইন স্ট্রেসম্যান, আর্নেস্ট মায়ারের মতো খ্যাতনামা প্রকৃতিবিদদের সংস্পর্শে আসেন তিনি।

খেলার ছলে সলিম একবার একটি হলুদকণ্ঠ চড়ুই শিকার করেন। আত্মজীবনী ‘দ্য ফল অব অ্যা স্প্যারো’তে উল্লেখ করেন এই হলুদকণ্ঠ চড়ুই শিকারই তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এই সময় ব্রিটিশ উদ্যোক্তা ও প্রকৃতিবিদ ডব্লিউএস মিলার্ড সলিমকে পাখি নিয়ে কিছু বই পড়তে দেন। এছাড়া বার্মার উম্মুক্ত প্রকৃতি তাকে বেশ প্রভাবিত করে। বার্মায় থাকাকালে তিনি এরউইন স্ট্রেসম্যান ও আনের্স্ট মায়ারের মতো বিখ্যাত প্রকৃতিবিদদের কাছাকাছি আসার সুযোগ পান।

১৯৩০ সালে ভারতে প্রথমবারের মতো পাখির ওপর নিয়মতান্ত্রিক জরিপ পরিচালনা করেন তিনি। ভারতীয় পাখি নিয়ে আরেক বিজ্ঞানী রিচার্ড মেইনার্তসের অনেক ভুল সঠিক করে দেন তিনি। ১৯৪৭ সালে বোম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির গুরুত্বপূর্ণ আসন তিনি অলঙ্কৃত করেন এবং এর উন্নয়নে সরকারি সাহায্যের সংস্থান করে দেন। পরবর্তীতে ভরতপুর পক্ষী অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠা করেন। ভারত সরকার ১৯৫৮ সালে তাকে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৫৮ সালে রাজ্যসভায় সদস্য মনোনীত হন। পাখি বিষয়ে অবদানের জন্য তিনি বার্ডম্যান অব ইন্ডিয়া নামে খ্যাত।

লেখালেখিতে তার বড় কাজ হলো দশ খণ্ডের হ্যান্ডবুক অব দি বার্ডস অব ইন্ডিয়া এন্ড পাকিস্তান। সলিম আলী তাঁর সমস্ত গবেষণা ও জ্ঞানকে একত্রিত ১৯৬৪ থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে দশ খণ্ডে সম্পন্ন করেন তাঁর কিংবদন্তি গ্রন্থ ‘হ্যান্ডবুক অব দ্য বার্ডস অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান’। বিশাল ভারতবর্ষের বৈচিত্র্যময় পাখিদের নিয়ে এটিই সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ বই। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ, সিকিম, ভূটান ও শ্রীলঙ্কার যাবতীয় পাখিকে তিনি এতে লিপিবদ্ধ করেন।

<

p style=”text-align: justify;”>এই বইটির মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া বিভিন্ন অঞ্চলের পাখির উপর আলাদা আলাদা বই লিখেন তিনি। যেমন- দি বার্ডস অব সিকিম, দি বার্ডস অব কেরালা, দি বার্ডস অব হিমালয় প্রভৃতি। বিভিন্ন জার্নালে তিনি পাখি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ লিখেছেন।
সলিম আলী ১৯১৮ সালে তাহমিনা নামে এক দূরবর্তী সম্পর্কের আত্মীয়াকে বিয়ে করেন। পাখি জরিপের কাজে গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য করেন তাঁর স্ত্রী তাহমিনা। ১৯৮৭ সালের ২৭ জুলাই মুম্বাইয়ে তিনি মারা যান।

[custom_poll]
In-Article Ad (Responsive)
Ad Slot End of Article (728x90)

Related Articles