দেশের শতাধিক বস্তির ছেলেমেয়েদের পড়ার দায়িত্ব নিয়ে নজির স্মাইল ফর অল সোসাইটির
News Desk, New Delhi: রাজস্থানের জয়পুরের বাসিন্দা ভূনেশ শর্মা। পেশায় ব্যবসায়ী। ২০১৫ সালের ঘটনা। বাড়ি থেকে নিজের গাড়িতে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন তিনি। আচমকা সিগনালে গাড়ি দাঁড়াতেই গাড়ির দরজায় হাত পাতে তিনটি বাচ্চা। ভূনেশ গাড়ির কাচ নামালে তাঁকে অবাক করে দিয়ে ওই তিনটি বাচ্চা কিছু কাগজ ও পেন্সিল কিনে দেওয়ার দাবি জানায়। বাচ্চাগুলির কথায় অবাক হয়েছিলেন ভূনেশ। সঙ্গে সঙ্গেই গাড়ি সাইড করে তিনি ওই তিনটি বাচ্চাকে খাতা, পেন, পেন্সিল কিনে দিয়েছিলেন।
এখানেই শেষ নয়, এরপর ভূনেশ ওই তিনটি বাচ্চার বাড়ির খোঁজ-খবর নেন। জানতে পারেন তাদের করুণ আর্থিক অবস্থার কথা। এরপর ভূনেশ ওই তিনটি বাচ্চাকে বিনামূল্যে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। এমনকী, ঋণ করে ওই তিনটি খুদেকে তিনি বেসরকারি স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থাও করেন। শুধু তিনটি বাচ্চা নয়, ভূনেশ ঠিক করেন, আরও অনেক দুস্থ বাচ্চাকে তিনি পড়ানোর ব্যবস্থা করবেন। তার জন্য ভূনেশ তৈরি করলেন ‘স্মাইল ফর অল’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
বিগত পাঁচ বছরে এই সংগঠনটি আড়েবহরে অনেক বেড়েছে। বর্তমানে এই সংগঠনটি সারাদেশে কমপক্ষে ১০০ টি বস্তি এলাকায় বেশ কয়েক হাজার বাচ্চার পড়াশোনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষে দেশের কয়েক শো স্বেচ্ছাসেবী বিনামূল্যে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়িয়ে থাকেন।
এসএফএকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভূনেশ ও তাঁর সহযোগীরা হাতিয়ার করেছেন ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে। সংগঠনের কাজে যাতে অর্থের অভাব না হয় সেজন্যই তারা এই কাজ করেছেন। সেই লক্ষ্যে এসএফএ একটি অ্যাপ চালু করেছে। যে অ্যাপটি নেটফ্লিক্স বা হটস্টারের মতই কাজ করে। যে সমস্ত ব্যক্তি বা সংস্থা দুস্থ অনাথ শিশুদের লেখাপড়ায় সাহায্য করতে চান তাঁরা এই ওটিটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সাবস্ক্রাইব করতে পারেন। আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে তাঁরা বাড়িয়ে দিতে পারেন সহযোগিতার হাত।
যারা সাবস্ক্রাইব করেন তাঁদের প্রত্যেককেই একটি শংসাপত্র দেওয়া হয়। ওই শংসাপত্রে সংস্থার উদ্দেশ্যর কথা বিস্তারিত লেখা থাকে। পাশাপাশি জানিয়ে দেওয়া হয় ওই টাকায় প্রতিটি বাচ্চাকে কী ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, বাচ্চাদের পড়াশোনা কেমন চলছে তার আপডেটও দেওয়া হয়। বর্তমানে এই ওটিটি প্লাটফর্মে এসএফএর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ছশো। ভূনেশ জানিয়েছেন, তাঁরা আশাবাদী আগামী দিনে তাঁদের এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাজের পরিধি আরও বাড়বে। তাঁরা আরও অনেক বেশি দুস্থ বাচ্চার দায়িত্ব নিতে পারবেন। অর্থের অভাবে শিশুদের ভবিষ্যৎ যাতে নষ্ট না হয়ে যায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করাই তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য।

